রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:২০ অপরাহ্ন

শিবচরে ডাবে বিষ মিশিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা চেষ্টা

মাদারীপুর প্রতিনিধি
ডাবে ছিদ্র করে বিষ মিশিয়ে মাদারীপুরের শিবচরে সালিশ বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ হাওলাদারকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। এসময় ডাব নিয়ে আসা ব্যাক্তিকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করেছে। টাকার বিনিময়ে ডাবে ছিদ্র করে বিষ ঢেলে ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল বলে আটককৃত পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের ৪ বারের চেয়ারম্যান মুরাদ হাওলাদার শনিবার বিকেলে উৎরাইল এলাকায় তার বাড়িতে বসে পল্লী বিদ্যুতের একটি সালিশ-মিমাংশা করছিলেন। এসময় তার পরিচিত একই ইউনিয়নের পশ্চিম চর কাকইর গ্রামের মাঝি ওবায়দুল শিকদার (৩৪) দুটি ডাব নিয়ে এসে নিজ বাড়ির গাছের ডাব বলে চেয়ারম্যানকে খাওয়ার অনুরোধ করে। তার অনুরোধে দুটি ডাব কাটা হলে একটি ডাব পানি শুন্য পাওয়া যায়। অপর ডাবের পানি গ্লাসে ঢেলে চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান ডাবের পানি মুখে নেওয়ার পর তীব্র দূর্গন্ধ ও অস্বস্তিকর লাগলে পানিতে বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি অনুমান করে মুখ থেকে পানি ফেলে দেয়। তখন ওবায়দুল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা আটক করে । নিলখী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি শাহারুলসহ পুলিশে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওবায়দুলকে আটক করে শিবচর থানায় নিয়ে আসে। ডাবের খোসা কেটে দেখা যায় বাহির থেকে ডাবের ভিতর পর্যন্ত সুকৌশলে ছিদ্র করে বিষাক্ত পদার্থ দেয়া হয়েছে। পরে গাছের চিকন ডাল দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আটক ওবায়দুল জানায় একই ইউনিয়নের আঃ হাই মাস্টারের ছেলে নূর আলম চেয়াম্যানকে খাওয়ানোর জন্য তাকে ডাব দুটি দিয়েছে। চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলার জন্য কিছুদিন আগে নূর আলমসহ আরো অপরিচিত দুই জন তাকে দুই লাখ টাকা দিতে চেয়েছে। আটক ওবায়দুল একই ইউনিয়নের পশ্চিম চর কাকইর গ্রামের মৃত কাদির শিকদারের ছেলে। এ ব্যাপারে রবিবার সন্ধায় শিবচর থানায় মামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কাজী বলেন, ওবায়দুল চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ডাবটি খাওয়ায়। এটি বড় একটি চক্রান্ত। এর আগেও তার উপর কয়েক দফা হামলা হয়েছিল।
আটক ওবায়দুল বলেন, আমি মাঝি। ট্রলার বিক্রির পর বেকার হয়ে পড়লে নূর আলম আমাকে চেয়্যারম্যানকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার বদলে ২ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিল। কাল ও আমাকে দুটি ডাব দিয়ে চেয়ারম্যানকে খাওয়াতে বলে।
শিরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ হাওলাদার হাওলাদার বলেন, আটক ওবায়দুলকে আমি বিশ^াস করতাম। তাই ওর দেওয়া ডাব কোন কিছু না ভেবেই পান করতে মুখে নিলে তীব্র দূর্গন্ধ ও মুখ আটকে আসলে বমি করে ফেলি। তখন ওবায়দুলের কাছে ডাব কোথা থেকে আনা হয়েছে জানতে চাইলে প্রথমে নিজ বাড়ির কথা বলে। পরে নূর আলমের সাথে আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে। নিশ্চয়ই ্ও পেছনে বড় কোন চক্রান্ত আছে। আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচার চাই।
নিলখী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি শাহারুল ইসলাম বলেন, ডাবের খোসা সংরক্ষন করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য। ওবায়দুল স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com